কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার ১০ টি উপায়

প্রিয় পাঠক মন্ডলী আজকে আমরা আলোচনা করব কবুতরের হিমান ও চুনা পায়খানা ভালো করার ১০ টি উপায় সম্পর্কে। অর্থাৎ কবুতরের ঝিমান ও সোনা পায়খানা ভালো করার 10 টি উপায় সহ কবুতরের ঝিমানো রোগের কিছু ঔষধ সম্পর্কেও জানবেন।
কবুতরের-ঝিমানো-ও-চুনা-পায়খানা-ভালো-করার-১০-টি-উপায়
সুতরাং কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার দশটি উপায়ে সহ ধিমানো রোগের ঔষধ এবং আসলে কবুতরের ঝিমায় কেন? এ সকল বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে হলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণটা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।

ভূমিকাঃ

বর্তমান সময়ে প্রায় আমাদের প্রত্যেকটা বাসা বাড়ি থেকে কবুতর পেলে থাকি। অর্থাৎ অনেকেই এটা শখের বসে পালে আবার, অনেকেই এটি খাবার জন্য পেলে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এটাও বেশি দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যেকটা কবুতর খুব বেশি ঝিমাচ্ছে এবং ঘন ঘন চুনা পায়খানা বা বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে। তো এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকে অনেক টেনশনের মধ্যে পড়ে গেছেন। 
আবার অনেকেই অনেক ধরনের ওষুধ খাওয়েছেন কিন্তু দেখা গেছে যে, ওষুধে কোন কাজ হয়নি। তো আর কোন টেনশন নেই আজকে সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। তো চলুন নিম্নে কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার ১০ টি উপায় সহ সকল সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কবুতরের ঝিমানো রোগের ঔষধ

কবুতরের ঝিমানো রোগ খুবই খারাপ একটি রোগ ।এই রোগে আক্রান্ত হলে এক পর্যায়ে কবুতর মারা যেতে পারে ।সেই জন্য শেষ পর্যায়ে যাওয়ার আগে কবুতরকে ঝিমানো রোগের ওষুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে এই রোগ সারানো সম্ভব।
কবুতরের ঝিমানো রোগের ওষুধগুলো হলোঃ
  • ​Pexacin (Opsonin) - 10gm Sachet
  • ​Peflox Vet (ACME)
  • ​Micronid (Ranata)
  • ​Erocot - 10gm Sachet
ঔষধ খাওয়ানোর নিয়মঃ প্রথমে একটি পাত্রে ১ লিটার পানি নিয়ে এর মধ্যে এক গ্রাম ওষুধ মিশিয়ে ৬-৭ দিন খাওয়াতে হবে।

কবুতর ঝিমায় কেন

আমরা অনেকেই শখ করে কবুতর পালন করি। আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক মানুষ কবুতর পালন করে এবং বাণিজ্যিকভাবেও কবুতর পালন করা হয় ।কবুতর পালন করার জন্য তেমন কোন বড় জায়গার প্রয়োজন হয় না, অল্প জায়গার মধ্যে ছোট করে ঘর করে কবুতর পালন করা যায়। 
 
খাবার দেওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়ম বা সময় নেই যে কোন সময় খাবার দেয়া যায় আবার অনেক সময় বাহিরে ছেড়ে দিলেও তার বাইরে খাবার খায়। কবুতরের বিভিন্ন রকম রোগ হয় আমরা আজকে এই আর্টিকেলে ঝিমানো রোগ নিয়ে আলোচনা করব।
কবুতর ঝিমানোর লক্ষণ গুলো নিজে দেওয়া হলোঃ
  1. কবুতর কম খাবার খায় অর্থাৎ কবুতরের খাওয়া কমে যায়
  2. ​কবুতরের শরীরে বারবার করে জ্বর আসে।
  3. ​সব কবুতর থেকে আলাদা হয়ে একাকী ঝিমাতে থাকে।
  4. ​ঠিকমতো রান্না ঝাপটা দিয়ে উঠতে পারে না।
  5. ​কবুতর হঠাৎ করে চুনের মতো পায়খানা করা শুরু করে।
  6. ​ভালো করে খাবার তুলে খাইতে পারেনা।
​যদি এই রোগের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে তাহলে এক পর্যায়ে এসে কবুতর মারা যেতে পারে। এ সকল সমস্যা যদি কবুতরের মত দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে কবুতরের ঝিমানো রোগ হয়েছে। কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার ৫ টি উপায়
কবুতরের ঝিমান ও চুনা পায়খানা ভালো করার ৫ টি উপায় নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
  1. ​অনেকগুলো কবুতরের মধ্যে যদি একটি কবুতরের ঝিমান ও চুনা পায়খানা হয় তাহলে সেই অসুস্থ কবুতরকে আলাদা করে রাখুন অন্য কবুতর গুলো থেকে।
  2. ​যদি সম্ভব হয় তাহলে অসুস্থ কবুতরকে রোদে রাখুন।
  3. ​ঝিমান ও চুল পায়খানা সমস্যায় কবুতরকে রেনামাইসিন ট্যাবলেট দুই ভাগ করে একভাগ অসুস্থ কবুতরকে খাওয়াতে হবে।
  4. ​অনেক সময় জ্বর আসার কারণেই কবুতরগুলো ঝিমাতে থাকে সেই ক্ষেত্রে কবুতরকে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়াতে পারেন।
  5. ​ঝিমান ও চুনা পায়খানা হইলে কবুতরের রুচি কমে যায়। এক্ষেত্রে তার রুচি বৃদ্ধির জন্য ধান, শস্য ,মরিচে বীজ ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন ।

কবুতরের সাদা চুনা পায়খানার চিকিৎসা

বসত বাড়িতে এখন অনেকে ই কবুতরের লালন পালন করে থাকে। অনেকে শখের বসে কবুতর পালন করে ।কবুতর অনেক সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে ।এরমধ্যে সাদা চুনা পায়খানা রোগ ,ঝিমানো রোগ ,জ্বর ইত্যাদি। আজ আমরা আলোচনা করব কবুতরের সাদা চুনা পায়খানার চিকিৎসা নিয়ে। 
 
মূলত কবুতর সাদা চুল পায়খানা করে এটা কৃমি বা কলেরা জাতীয় রোগ। এ রোগ থেকে প্রতিকারের জন্য কবুতরকে নিমপাতা বেটে খাইয়ে দেন। এতে সাদা চুনা পায়খানা থেকে কবুতর মুক্তি পেতে পারে ।আবার যদি এতে কাজ না হয় ,তাহলে ফার্মেসি থেকে ইমোটিল ট্যাবলেট নিয়ে এসে কবুতরকে খাওয়ান। এতে কবুতরের সাদা চুনা পায়খানা বা সবুজ পায়খানা রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

কবুতরের রেনামাইসিন ট্যাবলেট এর কাজ

রেনা মাইসিন ট্যাবলেট মূলত পশু ও পাখির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় হাঁস মুরগি কবুতর বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা তাদের রেনামাইসিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন রেনামাইসিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর ফলে খুব সহজেই হাঁস মুরগি কবুতর ও অন্যান্য গৃহপালিত পশু রোগ থেকে অর্থাৎ অসুস্থ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
রেনামাইসিন ট্যাবলেট কবুতরের কি কি কাজে লাগে সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
  1. ​কবুতরের ব্রংকাইটিস রোগের জন্য রেনামাইসিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়।
  2. ​আবার কবুতরের নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসায় রেনামাইসিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়।
  3. ​সাধারণত কবুতর, হাঁস ,মুরগি এর পাতলা পায়খানা চিকিৎসা ও এই ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়।
  4. ​কবুতরের সাদা চুনা পায়খানা চিকিৎসা ও এ ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়।
  5. ​কবুতর যদি ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তা প্রতিকারে রেনোমাইসিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়
​কবুতরের সর্দি কাশি রোগে আক্রান্ত হলে তা ভালো করতে রেনামাইসিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়।

কবুতরের প্যারালাইসিস রোগের চিকিৎসা

কবুতরের জ্বর সর্দি ঝিমানোর রোগ চুনা পায়খানা রোগের পাশাপাশি কবুতর অনেক সময় প্যারালাইসিস হয়ে যায়। 
 
প্যারালাইসিস রোগের চিকিৎসা হলো নিম্নরুপঃ
কবুতরের প্যারালাইসিস হলে সাধারণত ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারে না। পাখা ডানা ঝাপটা দিতে পারে না শরীর দুর্বল নিশ্চল হয়ে যায় ।প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক সময় কবুতর মারা যেতে পারে ।কবুতরের প্যারালাইসিস রোগের চিকিৎসায় কবুতরকে সময়ে টিকা প্রদান করতে হবে ।টিকা প্রদান করার মাধ্যমে কবুতরের প্যারালাইসিস রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কবুতরের ক্যাংকার রোগের চিকিৎসা

কবুতর ক্যাংকর রোগে আক্রান্ত হলে কবুতরের মুখের মধ্যে হালকা হলুদ ভাব ধরনের ময়লা জমে যায়। যদি কবুতরের এই লক্ষণ দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে যে কবুতর ক্যাংকর রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ক্যাংকর রোগে চিকিৎসায় কবুতরের জন্য একটি মলম ব্যবহার করা যেতে পারে মলমটির নাম হল absol oral paste । 
কবুতরের মুখের মধ্যের হলুদ ভাগ জায়গাগুলো পরিষ্কার করলে দেখা যাবে তার মুখের মধ্যে ঘা হয়েছে সপ্তাহে কয় বা কয়েকবার এই মলমটি ওই গায়ে লাগালে কবুতরের এই ক্যাংকর রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে কবুতরের ক্যাংকর রোগের চিকিৎসায় এ মলমটি অনেক ভালো।

শেষ কথাঃ কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার ১০ টি উপায়

প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন কবুতরের ঝিমানো ও চুনা পায়খানা ভালো করার ১০ টি উপায় সম্পর্কে। এবং এর পাশাপাশি কবুতরের বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা কিভাবে করাবেন এবং কবুতরের ঝিমানি কেন হয় এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। সুতরাং সব মিলিয়ে আমাদের আজকের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। এবং এই পোস্টটি আপনারা অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন যেন অন্যরাও উপকৃত হতে পারে,ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url