কমলা লেবুর উপকারিতা - কমলা লেবুর অপকারিতা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আজকে জানবো কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। আসলে আমরা কম বেশি সকলেই কমলা লেবু খায়ত। কিন্তু জানি না যে এর কি কি উপকারিতা রয়েছে এবং কি কি অপকারিতা রয়েছে। তো চলুন আজকে জেনে আসি। কমলা লেবুর উপকারিতা এবং কমলা লেবুর অপকারিতা সম্পর্কে
কমলা লেবুর উপকারিতা - কমলা লেবুর অপকারিতা
কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা, এবং কমলার কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে। এবং কোন কোন উপায়ে কমলালেবু খেলে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো এর পাশাপাশি কমলা লেবুর খোসাতে কি কি উপকারিতা রয়েছে এ বিষয় নিয়ে জানব। বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন।

ভূমিকা

কমলা লেবু আসলে এমন একটি ফল যেটি কিনা আমাদের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। কমলা তে রয়েছে লিমোনয়েড সমৃদ্ধ, এমনকি সাইট্রাস জাতীয় ফলগুলোর মধ্যে অধিক পরিমাণে ফাইটো কেমিক্যাল থাকে। যেগুলো কিনা আমাদের ত্বক স্তন ফুসফুস পাকস্থলী এবং কোলন জাতীয়সহ বিভিন্ন ধরনের, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে লড়াই করে। 

আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই কমলা লেবু আমাদের শরীরের জন্য এতটাই উপকারী যে, এটি আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমাতেও সহায়তা করে। তার কারণ কমলা লেবুতে রয়েছে অনেক পরিমাণে ফাইবার যেটি কিনা, চিকিৎসকদের মতে কোলেস্টেরল কমাতে অনেকটা সহায়তা করে। 
তো আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে কমলা লেবু কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা কতটুকু। তো নিম্নে জানব কমলা লেবুর উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ কি কি এই সম্পর্কে।

কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

কমলা লেবুর আসলে অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো জানলে আমরা কমলা খাওয়া ছাড়তে পারবো না, এতটা উপকারী। আর এই কমলা লেবু সারা বছর দেখা যায় কিন্তু শীতকালে এটি আরো বেশি দেখা যায়। আর এই দেখতে সুন্দর এবং সুগন্ধিময় সমৃদ্ধ ফলটি প্রায় সকলের কাছেই অধিক বেশি প্রিয়। 

বিশেষ করে বাচ্চাদের কাছেও এটা অনেক বেশি প্রিয়। আর কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যেটি কিনা আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। এবং এর পাশাপাশি এই ফলটিতে রয়েছে অনেক বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান। এমনকি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যদি বলি তাদের পুষ্টি যদি কম থাকে তাহলে এটি বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে, 

যদি নিয়মিত এই ফলটা খাওয়া যায়। এমনকি বাচ্চাদের অনেক বড় বড় রোগ সহ নানা রকম সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় কমলা লেবু। এবং অনেক ধরনের উপকারিতা, এবং এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আর তাছাড়া কমলা লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এর পাশাপাশি এতে রয়েছে আলফা এবং বিটা ক্যারোটিনের মত বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। 

তাছাড়া এটি ক্যান্সারের মতো এত বড় রোগ থেকেও মানুষকে বাঁচিয়ে তোলে। এজন্য আমাদের সকলেরই উচিত অন্তত প্রত্যেকদিন একটি করে হলেও কমলা লেবু খাওয়া। চলুন নিম্নে এবার কমলালেবুর কয়েকটি কমলা লেবুর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে আসি।

পুষ্টিগুণঃ
  • কমলা লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যেটি কিনা আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে।
  • কমলা লেবুতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকাই এটি আমাদের রাতকানার রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • কমলালেবু আমাদের শরীরের ক্যান্সারের কোষ কে ধ্বংস করে দেয়।
  • কমলা লেবুতে প্রচুর পরিমাণে আলফা এবং বিটা ক্যারোটিন এর মতো ফ্লাবনয়েড থাকায় এটি আমাদের ক্যান্সারকে সারিয়ে তোলে।
  • কমলা লেবু খেলে এটি আমাদের দাঁতের ক্যাভিটি দূর করে দেয়।
  • কমলালেবু আমাদের শরীরের , কোলেস্টেরল সোডিয়াম মুক্ত উপাদান গুলিকে সহ হৃদপিন্ডকে সুস্থ করে রাখে।
  • কমলালেবু আমাদের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে।
  • আমরা অনেক সময় অসুস্থতার মধ্যে পড়ে থাকি যেমন জ্বর সর্দি হলে, তো এই সময় যদি কমলালেবু খায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠা যায়।
  • কমলা খেলে এটি আমাদের শরীরের ক্যালসিয়াম সহ দেহের বিভিন্ন হাড় কে মজবুত করে তোলে।
  • কমলালেবু আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় চর্মরোগ ব্যাধি থেকে সুরক্ষা করে তোলে।
  • এছাড়াও কমলা লেবুতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কমলা লেবুর উপকারিতা।

কমলা খাওয়ার নিয়ম

আমরা ছোটবেলায় নানা-নানি দাদা-দাদীদের কাছ থেকে শুনে এসেছি তারা বলতো যে "খালি পেটে জল সয় না, এবং ভরা পেটে ফল সয় না" আসলেই কথাগুলো ঠিক ছিল কেননা খালি পেটে যদি কোন ব্যক্তি সকাল বেলা ফল খায়, তাহলে সেই ফল খেলে তার ক্ষতি হতে পারে অর্থাৎ গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে। 

এজন্য আপনি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই কোন কিছু না খেয়ে কখনো কোন ফল খাবেন না। শুধু কমলা লেবুই নয়, কোন ফলই খাবেন না। এজন্য চেষ্টা করবেন খালি পেটে কমলা লেবু না খাওয়ার। আর আপনি কখন কমলা লেবু খাবেন সেটির নিয়ম হলো। আপনি যখন এই কমলা লেবুটা খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবেন, 

তখন এই কমলা লেবু ছিলে নিবেন, ছিলে নেওয়ার পরে এর কোয়া গুলো এড়িয়ে নিবেন। এরপরে আস্তে আস্তে কমলার রস দিবেন চিপে এটি আপনার মুখে দিবেন। সরাসরি আবার কুয়া মুখে দিয়েন না, ভালো করে খোসাটা এড়িয়ে এরপর খাওয়া শুরু করুন। আবার আমরা অনেকেই কমলার শুধু রসটা চিপে খায় কিন্তু করাটা খায় না। 
আসলে আপনি যদি করা সহ, পুরো কমলাটা খান তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য অনেকটা বেশি উপকারী হবে। তাই চেষ্টা করবেন করা না ছিলেই ওটা শুদ্ধে খাওয়ার। কমলা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কমলা লেবু খেলে আপনার কি ঠান্ডা লাগতে পারে, এবং এটা খেলে কি হয় এই সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে নিম্নে পড়তে থাকুন।

কমলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে

আমাদের মধ্যে অনেকেই বলে থাকি যে ভাই কমলালেবু খাস না এটা খেলে কিন্তু তোর ঠান্ডা লাগবে আদৌ কি কমলা লেবু খেলে ঠান্ডা লাগে ? কখনোই নয়। আসলে কমলালেবু খেলে কখনোই ঠান্ডা লাগে না। আবার অনেকে মনে করে কমলালেবু খেলে সর্দি কাশিতে জরজীর্ণ হয়ে যায়। 

আসলে এই সকল ধারনা পুরাই ভুল এগুলা কখনোই সঠিক ধারণা নয়। এটি কখনোই কমলা লেবু খেলে কখনোই আপনার ঠান্ডা লাগবে না কেননা এটি আপনার যদি ঠান্ডা সময় সর্দি কাশি লেগে থাকে, তাহলে আপনি যদি নিয়মিত হবে কমলা লেবু খেতে থাকেন, তাহলে আপনি অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। 

আবার আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা মনে করেন কমলালেবু খেলে অনেকাংশে এসিডিটি কিংবা গ্যাস বেড়ে যায়। আসলে এই কথাটা মিথ্যা এটা কখনোই সত্য নয়। তবে আপনি যদি খালি পেটে কমলালেবু খান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার পেটে এসিডিটির সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

কিন্তু আপনি যদি ভরা পেটে সুস্থ মানুষ কমলা লেবু খান তাহলে আপনার কিভাবে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ? এটি সম্পূর্ণই ভুল ধারণা। সুতরাং আপনি কমলালেবু খাবেন এতে করে আপনার কোন ঠান্ডা লাগবে না গ্যাসও করবে না। যদি কিনা আপনি খালি পেটে না খান। আশা করি কমলা লেবুর উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

কমলা খাওয়ার অপকারিতা

আসলে মূলত কমলার কোন অপকারিতা দিক নেই। কারণ এটি একটি এমন ফল যেটি কিনা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে তোলে। তবে মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত কোন ফলই খাওয়া ঠিক নয়। তাই আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে কমলালেবু খাবেন কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কখনোই কমলা লেবু খাওয়া যাবে না। 

কেননা আপনি যদি অধিক পরিমাণে কমলালেবু খেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনার পেটে ব্যথা শুরু হয়ে যাবে। তবে পরিমাণ মতো খেলে আপনার কিছুই হবে না। কমলা লেবুর উপকারিতা এবং কমলা লেবুর অপকারিতা সহ কমলা খাওয়ার সঠিক সময় কোনটা এই সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে পুরো পোষ্ট জুড়ে।

কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা

কমলার খোসা আসলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার, যেটি কিনা আপনার ক্যান্সারের মত বড় বড় রোগ ছাড়াও আপনার যদি হাড়ের কোন রোগ হয়ে থাকে তাহলে সে হাড়ের রোগ গুলোও কমলার খোশায় ঠিক করে দেবে। কারণ কমলার খোসাতে রয়েছে ফ্লেভও নয়েড। তাছাড়াও কমলার খোশায় আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন যদি কমলার খোসা খান। 

কমলা আসলে যেমন সবার কাছে প্রিয় একটি ফল খেতেও যেমন সুন্দর দেখতেও তেমন সুন্দর। কিন্তু আমরা অনেকেই একটি ভুল করে থাকি কমলা লেবু খাওয়ার পরে আমরা এর খোসাটা ফেলে দেয়। আসলে জানিনা এই কমলার খোশায় কি কি ধরনের উপকারিতা রয়েছে। যদি জানতাম তাহলে কমলার খোসা কেউই ফেলতাম না। আসলে আমরা জানি যে কমলাতে রয়েছে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। 

কিন্তু এর খোসাতে কি রয়েছে এটা অনেকেই জানিনা। পলিফেনল নামক একপ্রকার উদ্ভিজ্জ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার কমলার খোসাতে রয়েছে। যেটি কিনা আপনার ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন ধরনের স্থূলতার মত দীর্ঘস্থায়ী যে রোগগুলো রয়েছে এ সকল রোগগুলা প্রতিরোধ করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

গবেষণায় জানা গিয়েছে যে কমলালেবুর খোসায় পলিফেনালের যে উপস্থিতি এই উপস্থিতিটা এত বেশি যে এর পরিমাণ, মূল যে কমলা ফলটা রয়েছে এই ফলটার চেয়েও অনেক বেশি। তাহলে বুঝতেই পারছেন কমলালেবুর খোসার মধ্যে কত গুণাগুণ রয়েছে। এমনকি এর মধ্যে রয়েছে এসেনশিয়াল অয়েল, যেটি কিনা লাই মোমেন দ্বারা সমৃদ্ধ করা। এটি আমাদের ক্যান্সার মোকাবেলা করতে সাহায্য করে। 

সুতরাং আশা করি বুঝতে পেরেছেন ফলটি যেরকম সুস্বাদু এবং উপকারী তেমনিভাবে এই ফলটির খোসায়ও অত্যান্ত উচ্চমানের আঁশ জাতীয় বস্তু রয়েছে যেটি কিনা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে এবং আমাদের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে তুলবে। আশা করি জানতে পেরেছেন কমলালেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর পাশাপাশি কমলার খোসার কি কি উপকারিতা রয়েছে এই সমস্ত বিষয়ে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আশা করি জানতে পেরেছেন কমলালেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা। এবং এর পাশাপাশি কমলালেবুর কি কি গুনাগুন রয়েছে এবং এটি কিভাবে কোন নিয়মে আপনি খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন। এবং এটি কখন কখন আপনি খাবেন খেলে আপনার কোন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না কিংবা কোন প্রকার ঠান্ডা লাগবে না। এই সকল বিষয়ে জেনেছেন এবং আমরা কমলা খেয়ে কমলার খোসা ফেলে দেই, 
আসলে কমলার খোসা ফেলে দেওয়াটা ঠিক না কারণ কমলার খোসাতে রয়েছে অনেক পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ সকল বিষয়ে পুরো বিস্তারিত জেনেছেন। আশা করছি আমাদের পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। সুতরাং কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন এবং বন্ধুদেরকে শেয়ার করে দিবেন, যেন তারাও উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url