মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা - কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম


প্রিয় পাঠক মন্ডলী, আজকে জানবো তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তুলসী পাতা কম বেশি আমরা সকলেই খেয়ে থাকি। বিশেষ করে যখন জ্বর কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকি তখন আমাদের তুলসী পাতার কথা মনে হয়। তো চলুন আজকে জানবো তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা - কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা কি? কিংবা মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা? আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা জানেন না। তো তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিম্নে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন।

খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা

তুলসী পাতা হচ্ছে এক ধরনের ঔষধি গাছ বা পাতা। বিশেষ করে চিকিৎসকরা চিকিৎসা বিজ্ঞানে জানিয়েছেন যে, তুলসী পাতা হচ্ছে এমন এক ধরনের পাতা যার গুনাগুন অত্যান্ত অনেক অনেক বেশি। তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রয়েছে প্রপার্টি যা কিনা মানুষের অকাল বার্ধক্য হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। 
এছাড়াও যদি আপনি খালি পেটে তুলসী পাতা খান তাহলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে মানুষের সারা দিনে রৌদ্রে তার ত্বক যতটুকু ক্ষত সৃষ্টি হয়, এ সকল ক্ষতগুলো ছেড়ে দেয় যদি সে একবার তুলসী পাতা খায়, তাহলে দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মুখে উজ্জ্বলতাটা আবার ফিরে এসেছে। তুলসী পাতার গুনাগুন অনেক অনেক বেশি। 

এছাড়াও আপনি যদি প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে তুলসীপাতা খেতে পারেন তাহলে এতে করে আপনি দারুন উপকার লাভ করতে পারবেন। যেমন আপনার বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। আপনার শরীরের মধ্যকার সকল ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যাবে। এমনকি আপনার মধ্যে থাকা কিছু কিছু ক্ষতিকর হরমোন রয়েছে এসকল হরমোন গুলো নিঃসরণ হয়ে যাবে। 

তাছাড়া যদি কোন ব্যক্তি প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা খায় তাহলে তার শরীরের মধ্যে থাকে টক্সিক নামক এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হতে থাকে যার ফলে ব্যক্তির সমস্ত হজম শক্তি যেগুলো অখুন্ন হয়ে থাকে এ সকল হজম শক্তি ফিরে আসবে। এমনকি আপনার গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, এবং এর পাশাপাশি পেটের যেকোনো ধরনের রোগ সেরে যাবে। 

এছাড়াও যখন আপনাদের সর্দি-কাশি লেগে থাকে তখন যদি আপনি নিয়মিত খালি পেটে তুলসী পাতার চা খান তাহলে দেখবেন আপনি অনেকটা আরাম পাচ্ছেন। তো আশা করি জানতে পেরেছেন খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা কিবা তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তো চলুন এবার জেনে আসি তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম কি এ সম্পর্কে।

তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

তুলসী পাতা বিভিন্ন ধরনের রোগের ঔষধ। আপনি যদি এই তুলসী পাতা জ্বর আসলে কিংবা সর্দি লাগলে কিংবা কখনো যদি ঠান্ডা লেগে থাকে তখন যদি আপনি তুলসী পাতা খান তাহলে আপনার জ্বর সর্দি কাশি সব কিছু ভালো হয়ে যাবে। এছাড়া তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরের মধ্যকার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক হরমোন গুলো বের করে দেয়। 

এবং আপনার শরীরের ভেতরকার বিভিন্ন ধরনের গ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য এ সকল রোগ দূর করে দেয়। তো তুলসী পাতা খাওয়ার একটি নিয়ম রয়েছে যদি আপনি এই সঠিক নিয়মে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য উপকারী হবে। তো তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম মূলত এরকম যে, একটি কিংবা দুইটি তুলসী পাতা নিবেন, নিয়ে এর সাথে দুই টেবিল চামচ মধু মিকচার করবেন। 

এবং যদি পারেন এর সাথে এক চিমটি করে হলুদের গুঁড়া নিবেন, নিয়ে আধা সিমটি লং পেপার নিবেন,নিয়ে আধা চিমটি করে গোলমরিচ এবং সবকিছু অল্প অল্প করে নিবেন, নেওয়ার পরে এগুলো একসঙ্গে করে ব্লেন্ডার করবেন। ব্লেন্ডার করে এই রসটি সেবন করবেন, দেখবেন আপনার সমস্ত ধরনের রোগ ব্যাধি দূর হয়ে গেছে। এছাড়াও আপনি অন্য একটি নিয়মে খেতে পারেন, 

এখন যেহেতু বর্তমানে খুব গরম পড়তেছে সেহেতু আপনি প্রত্যেকদিন দুই থেকে তিনবার করে ৫মিলি করে তুলসী পাতার রস খাবেন। তবে এটি আপনার বাদ দেওয়া যাবে না নিয়মিত ভাবে এই নিয়মে খেতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি কাঁচা তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খান তাহলেও এটা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে। তো আশা করছি জানতে পেরেছেন তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম কি এ সম্পর্কে।

মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা

আপনি যদি মধু এবং তুলসীপাতা খান, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন আপনার শরীরের মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন চলে এসেছে। অর্থাৎ দুইটি হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান জাতীয় এক ধরনের খাদ্য বা ঔষধ। আপনি যদি মধু এবং তুলসীপাতা খান তাহলে এতে করে আপনার কি কি উপকারিতা লাভ হতে পারে চলুন এ সম্পর্কে আবার জেনে নেওয়া যাক।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবেঃ মধু এবং তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং ভিটামিন। এই দুইটি জিনিসই মানুষের শরীরের মধ্যকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অধিক বেশি বৃদ্ধি করে তোলে। এজন্যই এই দুইটি জিনিসকে সর্ব রোগের ঔষধ বা সর্ব রোগের প্রতিরোধক হিসেবে প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর্যন্ত স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তুলিসী এবং মধুর মিশ্রণ কে।

এলার্জি কমিয়ে দিবেঃ মধু এবং তুলসী যদি আপনি নিয়মিত পান করেন তাহলে এর মধ্যে রয়েছে এক ধরনের এন্টি সেপটিক। যা কিনা আপনার ত্বককে প্রশমিত করবে এবং আপনার ত্বকের ভিতর তার সকল এলার্জি বের করে দিবে।

কিডনিতে পাথর দূর করে দিবেঃ তুলসী এবং মধুর যদি একসাথে মিশ্রণ করে খান তাহলে এতে করে আপনার কিডনির পাথর দূর হয়ে যাবে। কেননা কিডনির মধ্যে থাকা বিষাক্ত পদার্থগুলো সরিয়ে দেওয়ার জন্য তুলসী এবং মধুই যথেষ্ট।

হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখেঃ আপনি যদি নিয়মিত তুলসী পাতা এবং মধুখান, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক কমিয়ে দিবে, এবং আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেবে।
অকাল বার্ধক্য কমিয়ে দিবেঃ আপনি যদি এই ঘরোয়া দুটি উপাদান নিয়মিত পান করেন তাহলে এতে করে আপনার কোষের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটিয়ে দিবে অর্থাৎ আপনার অকাল বার্ধক্যকে কমিয়ে দিবে।
তো আপনি যদি নিয়মিত ভাবে তুলসী পাতা এবং মধু এরকমভাবে মিক্সচার করে খেতে পারেন তাহলে এতে করে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বৃদ্ধি পাবেই এর পাশাপাশি আপনি উপরোক্ত সকল উপকারিতা গুলো লাভ করতে পারবেন। 

তো আশা করি জানতে পেরেছেন মধু এবং তুলসী পাতার উপকারিতা সহ তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক

প্রথমে বলব মূলত প্রত্যেকটা জিনিসের একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।আর আপনি যদি সেই জিনিসটা নিয়মিত বা সঠিক নিয়মে যদি না পান করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে এর একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে এটাই স্বাভাবিক। সেরকমভাবে তুলসী পাতারও কিছু কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে যেগুলো চলুন জেনে আসি। তুলসী পাতা যদি আপনি সঠিক নিয়মে না খান, 

তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে এটি সুন্দর করে রস করতে হয় এবং তারপরে খেতে হয়, এটা হচ্ছে সঠিক নিয়ম তুলসী পাতা খাওয়ার। তো আপনি যদি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান তাহলে এক্ষেত্রে দেখা যায় এর মধ্যে এসিড থাকার কারণে এটি আপনার দাঁতের কিছু কিছু ক্ষতি করে থাকে। তবে সবসময় খেয়াল রাখবেন যে পুলিশী পাতা যেন শুকনো শুকনো গলার মধ্যে চলে না যায়। 

কেননা এক্ষেত্রে তখন আপনার গলার মধ্যে ভীষণ ভাবে ঝাঁজ ধরতে পারে। তোর জন্য সবসময় চেষ্টা করবেন তুলসী পাতা খাওয়াটা এটা রস বের করে মধুর সাথে মিক্সার করে খাবেন। তাহলে এতে করে আপনার কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তো আশা করছি বুঝতে পেরেছেন তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক কি? বা কি কিভাবে খেতে হবে এসব সম্পর্কে।

বন তুলসী গাছের বৈশিষ্ট্য

তুলসী পাতা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে অনেক সময় দেখা যায় রাম তুলসী পাতা অনেক সময় দেখা যায় বন তুলসী পাতা। কেউ বিভিন্ন ধরনের তুলসী পাতা রয়েছে আপনারা যেকোনো তুলসী পাতা খেলেই এর উপকারিতা লাভ করতে পারবেন। তো আজকে জানবো মূলত যে বন তুলসী পাতা বা বন তুলসী গাছের বৈশিষ্ট্য কি এ সম্পর্কে।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা - কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
আসলে বন তুলসী এটার একটি বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে আর এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো, ( Croton bonplandianus )। তো এটি মূলত এক ধরনের উদ্ভিদ আর এটি ১৮৬৪ সালের দিকে আবিষ্কৃত হয়। এই বন তুলসী পাতার ফুল গুলো দেখতে এবং পাতাগুলো দেখতে কিছুটা মরিচের গাছের মতো বা মরিচের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। 

তাছাড়া এই গাছগুলোর পাতা অনেক সবুজ এবং চকচকে। এমনকি আপনি যদি এই গাছের কোন ফুল কিংবা ফল আপনার মুখে যদি কোন ভাবে ঠেকে বা কোনোভাবে যদি লেগে যায় তাহলে আপনার মুখে দেখবেন অনেক জ্বালাপোড়া করবে। সুতরাং অবশ্যই এই গাছ থেকে বিরত থাকবেন যেন এই গাছ কোনভাবেই আপনার মুখে কিংবা শরীরের মধ্যে কোথাও না লাগে। 

এ সকল দিকে খেয়াল রাখবেন। এছাড়াও এই গাছের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এই গাছের ডাল গুলো হয় খুবই ছোট ছোট এবং ফুলগুলো হয় দেখতে অনেক সুন্দর। তো আশা করছি জানতে পেরেছেন বা বুঝতে পারলেন বন তুলসী গাছের বৈশিষ্ট্য কি এই সকল বিষয় সম্পর্কে।

সর্বশেষ পরামর্শ

তো প্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে অর্থাৎ তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং এর পাশাপাশি আরো জানতে পেরেছেন বন তুলসী গাছের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। এবং তুলসী পাতার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে কিনা এ সম্পর্কে এবং মধু ও তুলসী পাতা খেলে আপনি কি কি উপকারিতা লাভ করতে পারবেন। 
এ সকল বিষয় সম্পর্কে তাছাড়া তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম কি এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। তো আজকের পোস্টটি তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন যেন তারাও তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url