নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন

প্রিয় বন্ধুরা, সালাত/নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন যে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম বান্দার আমলনামার হিসাব শুরু করার সময় সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। কারো ছাড়া যদি সঠিক হয় তাহলে সে সফলতা লাভ করবে অর্থাৎ নাজাত পাবে।
আর যদি তার সালাত না হয় তাহলে সে নিরাশ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (তিরমিজি শরীফ)। আসলে মানুষের আমলের ক্ষেত্রে সালাতের গুরুত্ব কতটুকু তা এই একটি মাত্র হাদিস থেকে উপলব্ধি করা গেল। সুতরাং
ঈমানের পর সালাতেই হচ্ছে সকল আমলের মূল। আজকে আমরা জানবো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের
গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে জানতে হলে নিম্নে বিস্তারিত পোস্টটি পড়তে থাকুন।
ভূমিকা একজন প্রকৃত মুসলমানের জন্য নামাজ হচ্ছে অত্যন্ত একটা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর একজন মুসলমান কখনো নামাজ ছাড়া থাকতে পারে না, আর যদিও কেউ থাকে তাহলে মনে করবেন যে ওই ব্যক্তির ঈমান নেই। কারণ নামাজ এমন একটি ইবাদত যেটা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগেও এই ওসিয়ত করে গেছেন। উম্মতের উদ্দেশ্যে তিনি বলে গেছেন যে হে আমার উম্মতেরা তোমরা নামাজ ছেড়ো না। তাছাড়া কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। আর আমাদের উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি।
এবং আমাদের লক্ষ্য হলো জান্নাত। এখন আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য পূরণের সবচাইতে সহজ মাধ্যম হলো নামাজ। যেটার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে সরাসরি কোন কিছু চাইতে পারি কিংবা তার কাছে মাথা নত করতে পারি। আর রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এই নামাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সমাজে বিভিন্ন রকমের দাওয়াতি কাজ করেছেন, এবং তিনি এমন পর্যায়েও গিয়েছেন যে কাফেররা নবীজিকে পাথর মেরে আঘাত করেছে। তো যেই নামাজের জন্য নবীজি পাথরের আঘাত সহ্য করেছেন তাহলে সেই নামাজ আমরা কিভাবে ছেড়ে দেই একজন মুসলিম হিসেবে।
সুতরাং আমাদের সকলের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করা উচিত। যেহেতু আমরা নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দেই সেই তো আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেই হবে বাধ্যতামূলক।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলতঃ এখন আপনাদের সামনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কি কি গুরুত্ব এবং ফজিলত কি কি সেগুলা হাদিসের আলোকে তুলে ধরা হলোঃ
ফজরের সালাতেরফজিলতঃ এই প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে অসংখ্য হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে যেমন-
  • হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদিস নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন যে ফজরের দুই রাকাত (সালাত) পৃথিবী এবং পৃথিবীর কিছু থেকে উত্তম।
  • হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে," ফজরের দুই রাকাত নামাজকে অপরিহার্য করে নাও কেননা তাতে বড় ফজিলত রয়েছে (তাবারানী)।
  • বিশ্বনবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো এরশাদ করেন ফজরের সুন্নত সমূহ ত্যাগ করো না যদিও তোমাদের উপর শত্রুর ঘোড়া এসে যায়। হাদিসঃ আবু দাউদ
জোহরের সালাতের ফজিলতঃ এই সালাত প্রসঙ্গে হাদিসে অসংখ্য হাদিস উল্লেখ রয়েছে যেমন-
  • আমিরুল মোমেনীন হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি যোহরের প্রথম চার রাকাত পড়লো সে যেন তাহাজ্জুদের চার রাকাত পড়ল। (ফাতহুল বারী")।
  • এ ব্যাপারে আরো অভিমত হচ্ছে যে ফজরের সুন্নত এর পর জোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নতের মর্যাদাও রয়েছে। এ ব্যাপারে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন যে, ব্যক্তি জোহরের ওই চার রাকাত নামাজ ত্যাগ করল তার ভাগ্যে আমার সাফাত জুটবে না(দূররে মুখতার)
আসরের সালাতের ফজিলতঃ এই সালাত প্রসঙ্গে হাদিস হলো-
  • হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ব্যক্তির উপর দয়া করেন যে ব্যক্তি আসরের ফরজের পূর্বে চার রাকাত (সুন্নত) আদায় করবে। (আবু দাউদ মিশকাত তিরমিজি)
  • অমল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বর্ণনা করেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি আসরের ফরজের পূর্বে চার রাকাত (সুন্নত) পড়বে আল্লাহ তা'আলা ওই ব্যক্তির শরীরকে দোযখের আগুনে জন্য হারাম করে দিবেন।
মাগরিব সালাতের ফজিলতঃ হাদীস শরীফের মধ্যে মাগরিবের সালাতের ফজিলত সম্পর্কে এক একটি হাদিস উল্লেখ করা হলো-
  • হযরত হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন যে মাগরিবের ফরজের পর দুই রাকাত নামাজ তাড়াতাড়ি পড়ে নাও কেননা তারপর ওদের সাথে উপস্থাপিত করা হয়। অর্থাৎ সেই দুই রাকাত হলো (সুন্নত দুই রাকাত নামাজ)
  • আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সাথে মাগরিবের সালাত পড়লাম তারপর যার যার চলে যাওয়ার তারা চলে গেলেন এবং যার যার থেকে যা তারা থেকে গেলেন।যে তার দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হতে লাগলো। তিনি তার উপর ভর করে বসলেন বলেন তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের প্রতিপালক আসমানের দরজা খুলে দিয়েছে, এবং ফেরেশতাদের সম্পর্কে গর্ব করে বলেছেন তোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখো তারা অপেক্ষা করছে।
এশার নামাজের ফজিলতঃ এ সম্পর্কে হাদিস তাকে অসংখ্য হাদিস উল্লেখ রয়েছে-যেমন
  • ইবনে মাজা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণনা করেন রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি মসজিদে জামাতের সাথে ৪০ রাত এশার নামাজ এমনভাবে পড়বে যাতে প্রথম রাকাতের জন্য মুক্তির কথা লিখে দিবেন।
  • রাসূল সাঃ বলেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এশার নামাজ ও ফজরের নামাজ এই দুইটা নামাজ মুনাফিকদের কাছে সবচেয়ে বেশি কষ্টসাধ্য মনে হয়। (তিরমিজি শরীফ)।
  • রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম করেন যে ব্যক্তি এশার নামাজে উপস্থিত হল সে যেন অর্ধেক রাত জাগরণ করে এবাদত করলো।(বায়হাকী শরীফ)।
নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে ঘটনাঃ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গেলে সর্বপ্রথম বলা যায় যে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নামাজকে কতটুকু গুরুত্ব দিতেন সাথে সাথে সাহাবায়ে কেরামরাও কতটুকু গুরুত্ব দিতেন সালাতকে। এখন তো আমরা সবাই মুসলমান তারপরেও আমরা নামাজের গুরুত্ব দেই না। অথচ ইসলামের মূল ভিত্তি যে পাঁচটি এটা আমরা সকলেই জানা। একজন মানুষ মুসলমান পরিচয় লাভের জন্য সর্বপ্রথম তাকে ঈমান আনতে হবে আর সেই ঈমানটা হল আল্লাহ এবং তার সাথে কাউকে শরিক করা যাবে না।
মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন। এটা বিশ্বাস স্থাপনের পরেই হল নামাজ এর স্থান। নামাজ শব্দটিকে আরবিতে যেটা বলা হয় সালাত সালাত শব্দের আভিধানিক অর্থ আমরা জানি দোয়া তাজবীদ কিংবা জিকির তথা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা পরিভাষায় বলা যায় যে নির্দিষ্ট সময়ে যেই নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, সেই নির্দিষ্ট নিয়মের। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই পদ্ধতিতে শিখিয়ে গেছেন সেই সেই পদ্ধতিতে এবাদত করার নামই হলো সালাত।
আর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তাকে মেরাজে নিয়ে যান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মেরাজে যান, মেরাজে গমন করেন, তখন আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করে দেন। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে কারীমে সর্বমোট 82 বার নামাজের কথা বলেছেন। আর নামাজ হলো একটি আবশ্যিক ইবাদত। 
আর মহান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন কোরআনে কারীমে বলেছেন যে, "যারা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনে এবং নামাজকে কায়েম করে" ( সূরা বাকারা আয়াতঃ৩ )। 

অন্যত্র আয়াতে মহান আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন, "আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত প্রদান কর, এবং যারা রুকু করে ওই সকল ব্যক্তিদের সাথে রুকু করো" (বাকারা আয়াতঃ ৪৩) কোরআনে কারীমে আরও অসংখ্য জায়গায় মহান আল্লাহ তায়ালা নামাজের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন যে কোন কথা বলতেই মহান রব্বুল আলামীন প্রথমে নামাজের কথা তুলে ধরেন কোরআনে। যেমন মহান আল্লাহতালা আরেক জায়গায় বলেন, "তোমরা লোকদের সাথে উত্তম ভাবে কথা বলবে এবং সালাত আদায় করবে" (সূরা বাকারা)। এবং তিনি বলেন, তুমি বলে দাও আমার রব ন্যায় বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় তোমাদের মুখমন্ডল স্থির রেখো। (সূরা আরাফ আয়াতঃ ২৯) অর্থাৎ মহান আল্লাহকে সেজদা করো এবং তার ইবাদত করো।
সাহাবীদের নামাজের ঘটনাঃ প্রিয় বন্ধুরা রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর আমলের পরে সাহাবা একরামের আমলের স্থান। তারা যে যেভাবে আমল করেছেন সকল কিছু মহান রবের জন্য করেছেন। আর তাদের আমলের সাথে এখনকার আমাদের আমলের কোন মিল পাওয়া যাবে না। কারণ এখন আমরা নামাজের মধ্যে খুবই অলসতা করি, আর তখন সাহাবায়ে কেরামরা নামাজে কোন অলসতা করেননি তারা শাস্তির ভয়ে মহান আল্লাহতালার কাছে সঠিক ভাবে নামাজ আদায় করেছে।

আর এখনকার আমাদের নামাজ হচ্ছে এরকম দায় সরানো নামাজ, অলসতা করে নামাজ।
যারা নামাজে অলসতা করে সঠিক সময়ের নামাজ পড়ে না, মহান আল্লাহ তা'আলা তাদের নামাজ কবুল করেন না যারা নামাজ থেকে উদাসীন হয়ে থাকে অর্থাৎ নামাজে যারা রুকু সেজদা ওঠাবসা করার দোয়া কিছু এই সবকিছু সঠিকভাবে করে না। মহান আল্লাহতায়ালা তাদের এই নামাজ কবুল করবেন না এবং পরকালে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা অশেষ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। 
সাহাবায়ে কেরামরা সবসময় নামাজের মধ্যে বেশি সময় দিয়ে নামাজ আদায় করতেন তারা নামাজের সেজদায় দোয়াকে রাতে সবকিছুতে সময় দিতেন। আর আমরা নামাজে তো সময় দিতে চায়না, একটু কেরাত যদি পড়তে দেরি করে ইমাম সাহেব তাহলে পেছন থেকে গলার শব্দ দিতে থাকি। এই হচ্ছে আজকে আমাদের মুসলমানদের নামাজ। আর সাহাবীরা কত সময় লাগাতেন তারা সারারাত জেগে জেগে নামাজ আদায় করতেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামদেরকে যেভাবে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন নামাজ আদায় করতে সাহাবায়ে কেরাম সেভাবে করতেন। 

একদিন এক সাহাবীর ঘটনা, এক সাহাবী মসজিদের মধ্যে গেছেন নামাজ আদায়ের জন্য যখন সে নামাজ আদায় করবে তখন পাশে রাসুল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিলেন। এমন সময় সে নামাজ শেষ করল শেষ করে তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তাকে ডাকলেন, এবং বললেন তোমার নামাজ হয় নাই তুমি আবার নামাজ আদায় করো। তখন আবার ওই ব্যক্তি পুনরায় নামাজ আদায় করল করার পরে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বললেন তুমি আবার নামাজ পড়ো তোমার নামাজ হয় নাই। 
তখন ওই ব্যক্তি আবার পুনরায় নামাজ আদায় করো তোমার নামাজ হয় নাই। তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তাকে বললেন যে তোমার নামাজ কেন হচ্ছে না তুমি কি জানো? তখন তিনি বললেন যে জিনা আমি জানিনা, আপনি বলুন ইয়া রাসুল আল্লাহ। তখন রসুলে কারীম সাঃ বললেন যে তোমাকে নামাজে আরো বেশি সময় লাগাতে হবে। রুকুতে তুমি সময় দিবে, সেজদায় সময় দিবে, কিভাবে তুমি সময় দিয়ে দিয়ে নামাজ আদায় করবে। তো সাহাবায়ে কেরাম এই ভাবে তাদের নামাজ আদায় করতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন তারা সেভাবে নামাজ আদায় করেছেন।
নামাজ না পড়ার শাস্তিঃ প্রিয় বন্ধুরা আশা করি ওপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন যে নামাজের কত গুরুত্ব এবং কোন ওয়াক্তের নামাজের কেমন ফজিলত এ সম্পর্কে। এখন যারা নামাজ আদায় করে না যারা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের এই হুকুমটা আদায় করে না তাদের আল্লাহ তায়ালা কেমন শাস্তি দিবেন এই সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত যানি। আসলে আমরা মুসলমান, আমাদের ধর্ম হলো ইসলাম, আরে ইসলামের দ্বিতীয় একটি স্তম্ভ সেটা হল নামাজ যেটা ঈমানের পরেই যার স্থান। আল্লাহ তায়ালা অন্য কোন এবাদতকে এত বেশি গুরুত্ব দেননি যেভাবে নামাজের গুরুত্বটা দিয়েছেন আজ আমরা অনেকেই অলসতা করে নামাজটা পড়ি না আসলে নামাজ না পড়ার কি শাস্তি নিম্নে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
দুনিয়াতে যেই শাস্তি দেওয়া হবে বেনামাজিকেঃ
  • বেনামাজির চেহারার উপর থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা নেককারের নূর সরিয়ে দিবেন।
  • বেনামাজির নেক কাজের কোন বদলায় আল্লাহ তা'আলা দিবেন না তাকে।
  • বেনামাজির জীবনের উপর থেকে মহান আল্লাহতালা তার যত বরকত আছে সকল বরকত উঠিয়ে নিবেন।
  • মহান আল্লাহ তা'আলা তাঁর কোন দোয়া ও কবুল করবেন না।
  • আর যারা নেককার বান্দা তাদের দোয়ার মাধ্যমে বেনামাজির কোন হক থাকবে না।
মৃত্যুর সময় যে যেই শাস্তি গুলা আল্লাহতালা বেনামাজিকে দিবেনঃ
  • বেনামাজির মৃত্যু টা হবে অপমানের সঙ্গে।
  • এই বেনামাজি মৃত্যুর সময় অনেক পিপাসার্ধ হবে ঠিক যেন সমুদ্রের সমপরিমাণ পানি পান করলেও তার ওই সময় কোন পিপাসা মিটবে না এরকম পিপাসা হবে তার।
  • ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যু দিবেন
কবরের মধ্যে বেনামাজিকে যে শাস্তিগুলো দেওয়া হবেঃ
  • বেনামাজির জন্য অবস্থা খুবই সংকীর্ণ হয়ে যাবে। এতটাই সংকীর্ণ হবে যে বেনামাজির এক পাশের বুকের হাড় অন্য পাশের মধ্যে ঢুকে যাবে।
  • কবরের মধ্যেই বেনামাজিকে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।
  • বেনামাজির কবরে মহান রাব্বুল আলামীন বিষধর সাপ নিযুক্ত করে দিবেন। যেই সাপের চোখ হবে আগুনের মতো, ওই সাপের আওয়াজ হবে বজ্রের আওয়াজের মতো বিকট। বলবে যে আমাকে আমার রব তোমার জন্য নিযুক্ত করেছে যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যদয় পর্যন্ত দংশন করতে থাকে।
কিয়ামতের দিন বেনামাজির যে শাস্তি গুলো হবেঃ
  • বেনামাজির হিসাব মহান রব্বুল আলামীন খুব কঠোরভাবে নিবেন।
  • বেনামাজির উপর মহান রাব্বুল আলামীন ওই দিন অসন্তুষ্ট থাকবেন।
  • ঐ দিন বেনামাজির চেহারার উপর কিছু লেখা থাকবে, যে লেখাগুলো হলো, হে আল্লাহর হক নষ্টকারী, হে আল্লাহর সাথে গোস্তাকি ব্যক্তি তুমি দুনিয়াতে যেমন মহান আল্লাহতালার হক নষ্ট করে ফেলে আজ আল্লাহর রহমতে এমনিভাবে নিরাশ হয়ে গেলে।
সর্বশেষ কথাঃ প্রিয় বন্ধুরা আশা করি উপরের আলোচনা থেকে উপরের পোস্টটি থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে নামাজের কতটুকু গুরুত্ব এবং নামাজকে সাহাবায়ে কেরাম কেমন ভাবে গুরুত্ব দিতেন এবং তারা কেমন ভাবে নামাজ আদায় করতেন। এবং নামাজ আদায় না কারীর শাস্তি মহান রব্বুল আলামীন ইহকাল ও পরকাল এবং কবর জগতে কেমন করে দিবেন সেই সম্পর্কে জানলেন। আশা করি পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। সুতরাং মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব সহকারে এবং ফজিলত গুলো জেনে আমরা যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে পারি আল্লাহ তা'আলা আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমিন।..

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url