দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা

প্রিয় পাঠক মন্ডলী আজকে আমরা জানবো যে দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা কতটুকু? অর্থাৎ দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা কতটুকু এবং তারা কতটুকু দারিদ্র বিমোচন করতে পেরেছে। সুতরাং গ্রামীণ ব্যাংকের এই সকল তথ্য বিষয় সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।
দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা
সুতরাং দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা কি এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলী কতটুকু ও দারিদ্র বিমোচনে, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা কতটুকু ভূমিকা পালন করেছে। এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি সম্পুর্নটা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।

ভূমিকা: দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা

গ্রামীণ ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক যা কিনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৮৩ সালে। এই ব্যাংকটি হচ্ছে একটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক যা কিনা শুরু থেকেই এই পদ্ধতিতে যাত্রা শুরু করেছে। আর এদের মূলত মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে অর্থাৎ গ্রামীণ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গঠন করার পরেযারা ভূমিহীন এবং দারিদ্র এই সকল ব্যক্তিদেরকে ঋণ প্রদান করা। তবে নারীদের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে তাদেরকে প্রত্যেক ৫ জন ব্যক্তিদেরকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠন করার পরে এদেরকে ঋণ প্রদান করা হয়। 
এবং তাদের প্রত্যেককেই বিভিন্ন ধরনের কর্মস্থল বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় বৃহৎ জনসংখ্যা এক ধরনের দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করে। তো এই দারিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো এবং এদেরকে সাহায্য করাই মূলত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য। তাছাড়া বিগত তিন বছরে যখন করোনাভাইরাস এসে এবং ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশাল একটি অংশ ক্ষুধা দারিদ্র এবং বেকারত্বের মধ্যে পড়ে যায়। 

আর তাছাড়া এজন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি ও হাতে নিয়েছে, যার মধ্যে কিনা অন্যতম গ্রামীণ ব্যাংক অর্থায়ন একটি কর্মসূচি। জানতে পারলেন যে দারিদ্র নির্বাচনে অনেক কাল ধরেই গ্রামীণ ব্যাংক ভূমিকা পালন করা যাচ্ছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলি

গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলীর কথা বলতে গেলে এদের কার্যক্রমটা হচ্ছে অর্থায়ন বিলিয়ে দিয়ে দারিদ্রদেরকে মুক্ত করে যে কোন একটি পেশায় লাগিয়ে দেওয়া। এছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংকের কিছু কার্যাবলী সম্পর্কে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক।
  1. বর্তমান সময়ে দেখা যায় মানুষের মধ্যে অনেক একটি অনীহা চলে এসেছে গ্রামীণ ব্যাংকের উপরে। কিন্তু তারা বসে নেই তারা মানুষদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য মানুষের ঘরের দ্বারে দ্বারে পর্যন্ত এসে ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, বা তাদেরকে সাহায্য করে যাচ্ছে।
  2. বিভিন্ন ধরনের ঝড় বৃষ্টি বন্যা ঘূর্ণিঝড় নদী ভাঙ্গন সহ মানুষের ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সময় পাশে দাঁড়াচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক। অর্থাৎ বিভিন্ন ঝড় বৃষ্টির কারণে দেখা যায় মানুষের কষ্টের অর্জিত অনেক টাকা পয়সা গুলো পানিতে ভেসে চলে যায় বিভিন্ন মাধ্যমে। দেখা যায় অনেকের জমি জমা অনেকের ফসল অনেকের গবাদি পশু সহ বিভিন্ন ভাবে শেষ হয়ে যায়। আর ওই সময় পাশে দাঁড়ায় গ্রামীণ ব্যাংক।
  3. গ্রামের মধ্যে অনেক পরিবার রয়েছে যারা তাদের টাকার অভাবে শিশুদেরকে পড়ালেখা বা অনেক কাজে লাগাতে পারে না। ওই সময় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায় গ্রামীণ ব্যাংক।
  4. তাছাড়া শুধুমাত্র স্কুল বা কলেজের গণ্ডি পার হয়েই নয় অনেক সময় দেখা যায় লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য অনেক টাকা পয়সার প্রয়োজন হয় তো ওই সময় অনেকের না থাকার কারণে যেকোনো ধরনের চাকরি করতে পারে না। আর তখনই পাশে গিয়ে দাঁড়ায় গ্রামীণ ব্যাংক।
  5. গ্রামের প্রত্যেকটি গ্রামীণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে গড়ে প্রায় ৩৪ হাজার ৫৬৩ টাকা লোন দিয়ে থাকে গ্রামীণ ব্যাংক। মূলত এই কার্যক্রম গুলোই হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলী।
আশা করছি গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যাবলী কি কি এবং তারা কি কিভাবে গ্রামীন মানুষের পাশে দাঁড়ায় এ সম্পর্কে জানতে পারলেন।

গ্রামীণ দারিদ্র্যের সংজ্ঞা

অনেকে জানতে চেয়েছেন, যে গ্রামীন দারিদ্র্যের সংখ্যা কে আমরা তো এটা অনেক কাল থেকেই শুনে আসছি গ্রামীন দারিদ্র গ্রামীণ দারিদ্র। আসলে এই কথাটির সংজ্ঞা কি এটা অনেকের জানা নেই। আসলে গ্রামীন দারিদ্র অর্থাৎ ( Rural poverty ) এটি হচ্ছে বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অন্যতম একটি বাস্তবতা এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রামীন মানুষের মধ্যে এখনো অনেকেই দারিদ্র্যের শিকলের মধ্যে বন্দী হয়ে রয়েছে। 

এখনো দেখা যায় এরকম গ্রাম বাংলার অনেক দারিদ্র পীড়িত মানুষগুলো বা পরিবার গুলি সম্পদ বঞ্চিত হয়ে রয়েছে, অনেকের জমিন বঞ্চিত হয়ে রয়েছে। অর্থাৎ অনেকে আছে যাদের এখন পর্যন্ত কৃষি জমি নেই বা অকৃষির জাত অস্থায়ী বা স্থায়ী জমিও নেই। যাদের আওতাধীন কোন চাষ করার মতন জমি বা ক্ষেত নেই তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় দেখা যায় ৮২ ভাগই দারিদ্র। 

অর্থাৎ সেখান থেকে একটি হিসাব করে দেখা যায় প্রায় এক হেক্টর জমির মালিক যিনি তার পরিবার গুলোতে কোন দারিদ্রতার ছাপ নেই। তো এই সকল দারিদ্র বা গ্রাম কেন্দ্রিক মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য করা এবং তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করাই হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের মূল কাজ এবং এটাই হচ্ছে গ্রামীন দায়ীদের সংজ্ঞা।

দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম

গ্রামীণ ব্যাংক দ্বারা দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নতি ও সামাজিক অর্থনৈতিক স্থিতিতে উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যার মধ্যে চলুন কয়েকটি কার্যক্রম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যেগুলা তাদের কার্যক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
  • **শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামঃ গ্রামীণ ব্যক্তিদের জন্য সঠিক ব্যবসায়িক ও পেশা প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
  • **ছোট ও মাঝারি ঋণ প্রদানঃ গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের বাস্তবায়িত ব্যবসা উন্নয়নের জন্য ছোট ও মাঝারি ঋণ প্রদান করা।
  • **গ্রামীণ উদ্যোগ প্রোত্সাহনঃ গ্রামীণ অঞ্চলে উদ্যোগের প্রচুর সম্ভাবনা থাকতে পারে, এই উদ্যোগগুলি সমর্থন ও উন্নতির জন্য গ্রামীণ ব্যাংক সরবরাহ করে।
  • **কৃষি উন্নয়নঃ গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি সেক্টরের উন্নতির জন্য ঋণ প্রদান করে এবং কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
  • **গবেষণা ও বিকাশঃ গ্রামীণ অঞ্চলে প্রযুক্তির উন্নতি ও বাস্তবায়নের জন্য গবেষণা ও বিকাশের সাপোর্ট প্রদান করা।
  • **মাইক্রোফাইন্যান্স সমর্থনঃ অল্প পরিমাণের ধন সংগ্রহের জন্য মাইক্রোফাইন্যান্স প্রদান করা।
  • **মানবিক উন্নতি ও সম্মানঃ গ্রামীণ ব্যক্তিদের বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা।
  • **পরিবার পরামর্শ ও সাহায্যঃ গ্রামীণ পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরামর্শ ও সাহায্য প্রদান করা।
  • **জলস্রোত ও বাঁধ নির্মাণঃ গ্রামীণ অঞ্চলে জলস্রোত ও বাঁধ নির্মাণের জন্য ঋণ প্রদান করা।
  • **কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টঃ গ্রামীণ অঞ্চলে সামাজিক ও আর্থিক উন্নতির জন্য বিভিন্ন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টপ্রোজেক্ট পরিচালনা করা।
এই উল্লেখিত কার্যক্রমগুলি মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ অঞ্চলের আর্থিক স্থিতি ও জীবনযাত্রা উন্নতি করতে অবদান রাখে। অর্থাৎ দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম এগুলোই। আশা করছি জানতে পারলেন।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা

আমরা সকলেই জানি যে ব্যাংক মূলত এমন একটি জিনিস যা কিনা অর্থনীতির বাহক এবং ধারক বলা হয়ে থাকে। এই ব্যাংকটি হচ্ছে প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষের আর্থিক একটি খাতের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত বা ভরসা। দেশে যেভাবে খাতের আওতা প্রমাণ নয় বেড়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি ভাবে অর্থের দিক দিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেক বেশি আধুনিকায়ন হচ্ছে। 
আর আমরা সকলে জানি অর্থনৈতিক যে কোন দেশের প্রবৃদ্ধির একটি বড় ধরনের চালিকাশক্তি হচ্ছে ব্যাংকিং ব্যবস্থা। আমাদের বাংলাদেশে অসংখ্য ব্যাংকিং খাত রয়েছে যার মধ্যে স্বাধীনতার পরে অন্যতম ব্যাংকগুলো হচ্ছে সোনালী ব্যাংক রূপালী ব্যাংক পূর্বালী ব্যাংক বা জনতা এবং কৃষি ব্যাংক। এর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক। 
গ্রামীণ ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক যে ব্যাংকের নিয়ম হচ্ছে একটি দেশের একটি জাতির মধ্যে যদি কোন ব্যক্তি বা কোন শ্রমিক অর্থের অভাবে কোন কাজ না করতে পারে, তাহলে সে ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ হচ্ছে ওই শ্রমিককে কাজ দেওয়া বা তাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করা বা লোন দেওয়া। তাছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক অনেক ধরনের উন্নয়ন করেছে। এক কথায় বলা যায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম।

লেখক এর সর্বশেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক মন্ডল এ আশা করছি আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে, আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন দারিদ্র বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা কি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা কতটুকু এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। নেগেটিভ নেগেটিভ সুতরাং আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনারা এতোটুকুও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেটি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। সুতরাং আজকের মত আমাদের পোস্ট এখানে শেষ করছি, ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url